1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : News Editor : News Editor
রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:০৬ অপরাহ্ন

তিনি ছিলেন স্বাধীনতার অন্যতম রূপকার

বাংলার মুখ বিডি ২৪ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : রবিবার, ১১ জুন, ২০২৩
  • ৪০ বার সংবাদ দেখেছেন
তিনি ছিলেন স্বাধীনতার অন্যতম রূপকার
তিনি ছিলেন স্বাধীনতার অন্যতম রূপকার

কেউ বলেন দাদা, কেউ সিরাজ ভাই। আমি দুটোই বলতাম, বৃহস্পতিবার চলে গেলেন, বয়স হয়েছিল ৮২, আরও কয়েক বছর থাকতে পারতেন। শোকে-দুঃখে ভাসিয়ে দিয়ে চলে গেলেন জাতিকে। হাসপাতালে দেখতে এসেছিলেন অনেকে, জাসদ পরিবারের সব ধারার নেতাকর্মী, ৭ দলীয় মঞ্চের নেতারা, ব্যক্তিগত ভক্ত-অনুরাগী অনেকে, তবে আওয়ামী লীগের কাউকে দেখিনি।

অনেকদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত ও নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। মে মাস থেকে প্রথমে শমরিতা হাসপাতালে, পরে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তিনি আমাদের নেতা ছিলেন, ছাত্রজীবনে তার সংস্পর্শে এসে স্বাধীনতার মন্ত্রে দিক্ষিত হয়েছি, আমার মতো হাজারো কর্মী উদ্বুদ্ধ হয়েছে। তার ব্যক্তিত্বে ও অভিব্যক্তিতে জাদু ছিল। তাকে হ্যামিলনের বংশীবাদকের সঙ্গে তুলনা করে স্বাধীনতা আন্দোলনের এক বড় বংশীবাদক বললে ভুল হবে না।

তিনি ছিলেন স্বাধীনতার একজন সত্যিকার রূপকার। স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছেন এবং তা অর্জন করার জন্য কর্মী ও সংগঠন গড়ে তুলেছেন। প্রথমে নিউক্লিয়াস গঠন, পরে ছাত্র ও যুব সমাজকে নেতৃত্ব প্রদান, ছাত্রলীগকে গড়ে তোলা এবং পরে স্বাধীনতার লক্ষ্যে শ্রমিক সংগঠন তথা শ্রমিক লীগ গড়ে তুলেছেন। অসামান্য সাংগঠনিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন তিনি। ৬ দফার আন্দোলনকে স্বাধীনতার লক্ষ্যে নিয়ে যেতে, শেখ মুজিবকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্ত করতে নেপথ্যে থেকে ৬৯-এর যে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে, তা শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধুতে পরিণত করেছিল। বঙ্গবন্ধুর উত্থানের ইতিহাসে সিরাজ ভাই ছিলেন অবিচ্ছেদ্য অংশ। নিউক্লিয়াসের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ছাত্রসমাজের দ্বারা স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত, স্বাধীনতার ইশতেহার ঘোষণা ইত্যাদিসহ নানাবিধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনতার সংগ্রামকে স্বাধীনতামুখী করে তোলে তার নেতৃত্ব। রাজপথে তার রচিত সংগ্রামের কর্মকৌশল দেশকে স্বাধীনতার পথে আপসহীন ধারায় অগ্রসর করে। ওই সময়ে সিরাজ ভাই বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির অন্যতম শক্তিতে পরিণত হন।

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ তাকে ধারণ করতে পারেনি। সিরাজ ভাই জাসদ গঠন করেছিলেন, আমরা তার সঙ্গে ছিলাম। জাসদের উত্থান হয়েছিল ঠিকই, তবে অনেক কারণে জাসদকে সংঘবদ্ধ রাখা যায়নি। এজন্য তার কিছু স্বদায় আছে নিশ্চয়ই। স্বাধীনতার পর জাসদের আন্দোলনে অনেক নেতাকর্মী ও তাদের পরিবার ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে, মৃত্যুবরণ করেছে। এ থেকে অভিজ্ঞতা নিয়েই রাজনীতি করতে হবে। ভুল পথ পরিহার করে সংগ্রামের পথই দেশের জন্য শ্রেয় পথ।

সিরাজ ভাই অকৃতদার ছিলেন। খুব সাধারণ জীবনযাপন করতেন। যে কোনো বিষয়ে, সেটা রাজনীতি বা ব্যক্তিজীবন, প্রতিশ্রুতির অনেক মূল্য দিতেন। সব সময় দেশের কল্যাণ নিয়েই ভাবতেন। বহুমুখী চিন্তার সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব দিতেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি জনগণের কল্যাণ ও মুক্তির পথ খুঁজে বেড়িয়েছেন।

সিরাজুল আলম খানের মতো দেশপ্রেমিক ও অতুলনীয় সাংগঠনিক যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষ নিত্য জন্মায় না। বাংলাদেশে আবার এমন কেউ কবে জন্মাবে, সেজন্য হয়তো আমাদের অনেক অপেক্ষা করতে হবে।

সিরাজ ভাইয়ের অনন্তযাত্রা শান্তিময় হোক, এ প্রার্থনা করি।

শরীফ নুরুল আম্বিয়া : সভাপতি, বাংলাদেশ জাসদ

সামাজিক যোগাযোগ এ শেয়ার করুন

একই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২১ বাংলার মুখ বিডি
ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট @ ইজি আইটি সল্যুশন