1. masudkhan89@yahoo.com : admin :
  2. banglarmukhbd24@gmail.com : News Editor : News Editor
শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:০০ পূর্বাহ্ন

তারা যা করেছেন হিটলারও তা করেনি, শুনানিতে আইনজীবী

সাংবাদিক
  • আপডেট সময় : রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪
  • ২১ বার সংবাদ দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : তারা বাচ্চাদের সাথে যা করেছে পৃথিবীর ইতিহাসে হিটলারও এটা করেনি। হিটলার সৈন্য মেরেছে, ইহুদী মেরেছে কিন্তু কোনো বাচ্চা মারেনি। তারা যা করেছে তাদের বিচার এই জগতে হবে, পরকালেও হবে।

রোববার (২৫ আগস্ট) রাতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরোবিয়া খানমের আদালতে আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানিতে এসব কথা বলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী।

এদিন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহাইল এবং ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের এক মামলায় ফের সাত  দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহমিদ মোবিন রাতুলকে হত্যাচেষ্টা অভিযোগে চকবাজার থানার মামলায় সৈকতের আরও পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিন আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়। সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় প্রত্যেককে গ্রেপ্তার দেখানোসহ ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। এছাড়া একটি হত্যাচেষ্টা মামলায়ও সৈকতকে গ্রেপ্তার দেখানোসহ আরও সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।

প্রথমে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদ তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে ইন্সপেক্টর মো. আসাদুজ্জামান রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থণা করেন। তিনি বলেন, ‘পলকসহ অন্যান্যদের নির্দেশে ভিকটিমকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তাদের সর্বোচ্চ রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থণা করছি।’

এ সময় বিচারক বলেন, ‘একজনের নাম বললেন। বাকীরা কি জড়িত না?’ তখন আসাদুজ্জামান বলেন, ‘তাদের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’

বিএনপিপন্থী আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতা যোক্তিক দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি করে শত শত জনকে হত্যা করা হয়।

টুকুর বিষয়ে বলেন, ‘টুকু সরকারসহ এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আন্দোলন নস্যাৎ করতে সরকারকে সহযোগিতা করে।’

পলকের বিষয়ে বলেন, ‘পৃথিবীতে যা ঘটেনি পলক তাই ঘটিয়েছেন। তার নির্দেশনায় সারাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। কখন নেট বন্ধ করা হয়, হত্যার পরিকল্পনা করলে। নেট, গ্যাস, পানি বন্ধ করে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। ইন্টারনেট অপরিহার্য। নেট বন্ধ করে দেয় যেন আন্দোলনকারীরা রাস্তায় না নামতে পারে। গণহত্যা করত পারে। যা সবচেয়ে গর্হিত, নিকৃষ্ট সিদ্ধান্ত। পৃথিবী থেকে বাংলাদেশকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ব্যবসায়ীদের হাজার হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়। জনগণের অধিকার হরণ করা হয়েছে। এই দায় তার।’

সৈকতের বিষয়ে বলেন, ‘রোকেয়া হলে সামনে ছাত্রলীগ কী তাণ্ডব চালিয়েছে। শিক্ষার্থীদের ওপর চাপাতি দিয়ে হামলা চালিয়েছে। মেয়েদের শ্লীলতাহানি করে। তাদের জুলুম দেখে সবাই স্তব্ধ। একারণে তারা রাস্তায় নেমেছে। হামলার নেতৃত্বে ছিলো সৈকত।’

জয়ও সরকারের ন্যক্কারজনক ষড়যন্ত্রে সহযোগিতা করেছে।

আহমদের বিষয়ে বলেন, ‘এই লোক টেলিভিশনে মিথ্যা কথা বলতেন। প্রতিপক্ষকে কথা বলতে দিতেন না। আন্দোলনের সময় টেলিভিশনে বক্তব্য দিয়ে নেতাকর্মীদের উস্কে দিতেন। তিনিও ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত আছে। তারও রিমান্ড প্রয়োজন।’

মোহাম্মদ সোহাইলের বিষয়ে বলেন, ‘তিনি র‌্যাবে ছিলেন। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম, খুন করেছেন। পুরস্কার হিসেবে পোর্টের চেয়ার পেয়েছেন। বিরোধীদের হত্যা, আন্দোলন স্তব্ধ করতে তার ভূমিকা রয়েছে।’

ওমর ফারুক বলেন, ‘এরা প্রত্যেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সরকারের সাথে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলো। কোনো না কোনোভাবে হাসিনা সরকারকে সাহায্য করেছে।’

এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। আহমদ হোসেনের পক্ষে তার আইনজীবী বলেন, ‘তিনি সন্ধিগ্ধ আসামি, এজাহারনামীয় নয়। আরেক মামলায় তাকে চারদিনের রিমান্ডে নিয়েছিল। কোনো সংশ্লিষ্টতা পাইনি। রিমান্ড মানসিক অত্যাচার ছাড়া কিছু না।’

সোহাইলের আইনজীবী বলেন, ‘১৯ আগস্ট পর্যন্ত তিনি চিটাগংপোর্টে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। ফুলআপ অপারেশন কখনো করেননি। তাকে রিমান্ডে নিয়েছিলো। রিমান্ডে কোনো তথ্য পায়নি। কোনো কর্মকান্ডে জড়িত না। রিমান্ড বাতিল করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।’

টুকুর আইনজীবী বলেন, ‘তিনি অসুস্থ। চিকিৎসার প্রয়োজন। তার মেডিক্যাল কাগজপত্র আদালতে জমা দেন আইনজীবী। বিচারক তা দেখেন। পরে জানান, মেজর কোনো সমস্যা নেই।’

পলকের আইনজীবী বলেন, ‘তিনি ঘটনার সাথে জড়িত না। তাকে ভিকটিমাইজড করা হয়েছে। ঘটনার এক মাস দুই দিন পর মামলা করা হয়েছে। তিনি ঘটনার সাথে জড়িত না।’

তবে আরিফ খান জয় ও সৈকতের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। এ সময় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থণা করেন।

তখনবিচারক জানতে চান, ১০ দিনের রিমান্ড কোন গ্রাউন্ডে চাচ্ছেন। তখন আইনজীবীরা বলেন, ‘এরা গণহত্যাকারী।’ পরে ওমর ফারুক বলেন, ‘আমরা তো বলেছি তারা কোনভাবে জড়িত।’

এরপর  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহমিদ মোবিন রাতুলকে হত্যাচেষ্টা অভিযোগে চকবাজার থানার মামলায় সৈকতের সাত দিনের রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়। রাষ্ট্রপক্ষে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘গত ১৬ জুলাই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে সমাবেশ করে। ছাত্রলীগ, যুবলীগ সেখানে হামলা চালায়। তারা সেখানে টিকতে না পেরে নাজিমউদ্দিন রোড দিয়ে যাচ্ছিল। উপর থেকে গুলি ছোড়া হয়। রাতুল গুলিবিদ্ধ হয়। এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছে সে।’

ওমর ফারুক বলেন, ‘সহপাঠীদের ওপর হামলা করে। শত শত ছেলের চোখ নষ্ট, হাত-পা পঙ্গু করে দিয়েছে। আহত হয়ে তারা হাসপাতালে আশ্রয় নেয়। সেখানেও হামলা চালায়, গুলি করে। এজাহারভূক্ত আসামি। সাতদিনের রিমান্ড প্রার্থণা করছি।’

পরে আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।

সামাজিক যোগাযোগ এ শেয়ার করুন

একই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২১ বাংলার মুখ বিডি
ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট @ ইজি আইটি সল্যুশন