তালেবানের ঘোর বিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) হামলার দায় স্বীকার করেছে। মসজিদে নামাজ চলার সময় মুসল্লিদের ভিড়ে আইএস এর এক আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী বিস্ফোরক বেল্টের বিস্ফোরণ ঘটায় বলে জানানো হয়েছে খবরে।
সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহে রাজধানী কাবুলের ঈদগাহ মসজিদের প্রবেশপথের কাছে হামলাসহ কয়েকটি বোমা হামলার ঘটনার পর নতুন করে এই রক্তক্ষয়ী হামলা হল। আগের কয়েকটি বোমা হামলার দায়ও আইএস স্বীকার করেছে।
আফগানিস্তানে একের পর এক এমন বোমা হামলা দেশটির নতুন তালেবান শাসকদের সামনে নিরাপত্তা রক্ষার চ্যালেঞ্জই সামনে নিয়ে আসছে।
কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠী তালেবান গত অগাস্টে আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতা দখল করেছে। তারপর থেকে আইএস দমনে কাবুলে এই জঙ্গি গোষ্ঠীটির আস্তানায় অভিযান চালিয়ে আসছে তালেবান।
শুক্রবারের হামলা সম্পর্কে টুইটারে তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, “আজ বিকালে শিয়াদের একটি মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটেছে…এতে অনেকেই মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন।”
তথ্য মন্ত্রণালয় পরিচালিত বখতার বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ৪৬ জন নিহত এবং ১৪৩ জন আহত হয়েছে।
বিবিসি হামলার ঘটনায় অন্তত ৫০ জন নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছে। স্থানীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে টোলো নিউজ জানায়, হামলার সময় মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে সমবেত হয়েছিল ৩শ’র বেশি মানুষ।
হামলার দায় কোনও গোষ্ঠী স্বীকার না করলেও হামলার ধরন দেখে তা আইএস এর আফগান শাখা আইএস-খোরাসানের (আইএস-কে) কাজ বলেই আঁচ করা যাচ্ছে। অগাস্টে কাবুলের বিমানবন্দরে বড় ধরনের আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল এ গোষ্ঠীটিই।
আইএস-কে গোষ্ঠীর সুন্নি যোদ্ধারা অতীতে বারবারই শিয়া সংখ্যালঘুদের নিশানা করে হামলা চালিয়েছে। আত্মঘাতী হামলা চলেছে মসজিদে, স্পোর্টস ক্লাবে এবং স্কুলেও। সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহে আইএস তালেবানের বিরুদ্ধে হামলা জোরদার করেছে।
কাবুলে তালেবান নেতাদের একটি শেষকৃত্যানুষ্ঠানে আইএস হামলা চালিয়েছে কিছুদিন আগেই। পূর্বাঞ্চলীয় নানগহর এবং কুনার প্রদেশেও বেশকিছু ছোটখাট হামলা হয়েছে। এই প্রদেশগুলো আগে আইএস এর ঘাঁটি ছিল।
শুক্রবার কুন্দুজের মসজিদে হামলা দেশের উত্তরে আইএস এর তৎপরতা বাড়ারই আলামত দিচ্ছে। তালেবান বলছে, তারা কয়েকডজন আইএস সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে এবং সংশ্লিষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর সন্দেহভাজন অন্যান্য সদস্যদের হত্যাও করেছে।
তবে জনসম্মুখে তারা আইএস এর হুমকি অতটা গুরুতর নয় বলে জানান দিচ্ছে। তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর অনেক আফগানই আশা করেছিল, শাসনব্যবস্থা কঠোর হলেও অন্তত আরও কিছুটা শান্তি ও নিরাপত্তা থাকবে। কিন্তু নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নত করার তালেবানের প্রতিশ্রুতি পূরণের পথে এখন হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে আইএস।