জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক :সাইবার নিরাপত্তা আইন পুরোপুরি বাতিল করা উচিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর কার্যালয়ে তথ্য অধিকার ফোরাম ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত ‘স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমূলক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তথ্য অধিকার: এনজিওদের সহায়ক ভূমিকা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিগত সরকারের আমলে তথ্য অধিকার আইন হয়েছে আবার তথ্য অধিকার বিনাশ করারও আইন হয়েছে উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইন পুরোপুরি বাতিল করা উচিত হবে না। কারণ এটি মূলত দুই ধরনের অপরাধ প্রতিরোধের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ‘কম্পিউটার ওফেন্স’ (কম্পিউটার ব্যবহার করে অপরাধ সংঘটন) এবং অন্যটি ‘স্পিচ ওফেন্স’। ‘স্পিচ ওফেন্স’ বাতিল করা সম্ভব হলেও ‘কম্পিউটার ওফেন্স’ বাতিল করা সঠিক হবে না। সাইবার নিরাপত্তা আইন অচিরেই সংশোধন বা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
আসিফ নজরুল বলেন, তথ্য অধিকার নিয়ে আমাদের সচেতনতার অভাব রয়েছে। এ অধিকারটা কিন্তু অন্যান্য অধিকারের মতো নয়। তথ্য অধিকার ছাড়া সব অধিকার মূল্যহীন। প্রত্যেকটা অধিকারের সঙ্গেই এই অধিকারটা সংযুক্ত। তাই তথ্য অধিকার নিয়ে একটি আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
‘আমরা একটা সময় প্রধানমন্ত্রীর নাম উল্লেখ করতে পারতাম না। আমাদের বলা হতো যে, সব বলা যাবে প্রধানমন্ত্রীর নামটি উল্লেখ করা যাবে না… এভাবে উল্লেখ করতে হতো। উনি (শেখ হাসিনা) একটা অত্যাচারী দানবে পরিণত হয়েছিলেন। কিন্তু আমরা কি তার প্রতিবাদ করেছিলাম? করিনি। আমরা যখন প্রতিবাদ করেছিলাম তখন ১০-১২ জনের বেশি লোক পেতাম না। সুতরাং, এ বিষয়গুলো ভুলে গেলে চলবে না। দুঃশাসনের সময়ে প্রতিবাদ করাটাই সবচেয়ে বড় ব্যাপার। প্রতিবাদটা সব সময়ই বজায় রাখতে হবে। এমনকি, আমাদেরও যদি কোনও ভুল হয় তারও প্রতিবাদ জানাতে হবে’, বলেন আইন উপদেষ্টা।
এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির, এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন, এমআরডিআই’র নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তথ্য অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক শাহীন আনাম এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ড. অনন্য রায়হান।